ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিঙ্গাইরে মেয়াদহীন ইনজেকশন পুশে দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

আজকের তরুণকণ্ঠ

সিঙ্গাইর(মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করায় পর পর দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্র ও শনিবার (১৭মে) সিঙ্গাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিঙ্গাইর ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ট্যাজিড নামে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান নিহতের স্বজনরা। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তারা।

জানাগেছে, গত শুক্রবার মধ্য সিঙ্গাইর এলকার মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী ও শায়েস্তা ইউনিয়নের চর লক্ষীপুর এলাকার মো. ফিরোজের স্ত্রী প্রসব বেদনা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। শুক্রবার বিকেলে অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে দুই নারী দুইজন পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। পরে দুই নবজাতকের শরীরে মেয়াদ উত্তীর্ণ ২৫০ মিলির ট্যাজিড ইঞ্জেকশন পুশ করেন ডাক্তার। ইঞ্জেকশন পুশ করার পর দুই নবজাতকের হার্টবিট কমে যায়। একজন ঢাকার শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন। অপরজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মারা যায়।

মৃত নবজাতকের বাবা মো. ফিরোজ বলেন, শুক্রবার বিকেলে ডাক্তার শামিমা রহমান আমার স্ত্রীকে অস্ত্র প্রচার করে। পরে আমি পুত্র সন্তানের বাবা হই। আজ সকালে হাসপাতালের নার্স আমার ছেলেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করে। ইনজেকশন পুশ করার এক ঘণ্টার মধ্যে আমার ছেলের মৃত্যু হয়।

মো. মাজেদুল ইসলাম নামে আরেক নবজাতকের পিতা বলেন, জন্মের পর আমার ছেলে খুব সুস্থ ছিলো। আমাদের সামনে নার্সরা একটি মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার ছেলের হার্টবিট কমে যায়। ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরপর দুইজন শিশুর মৃত্যুতে আমরা হতবাক। এটি মৃত্যু নয় এটা হত্যা, আমরা হত্যার সঠিক বিচার চাই।

সিঙ্গাইর ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মিজানুর রহমান লিটন বলেন, এটি একটি দুর্ঘটনা। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাফছান রেজা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অতিদ্রুত ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে.ও.এম তৌফিক আজম বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশনে নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। হাসপাতালটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

প্রকাশ : ০১:২৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

সিঙ্গাইরে মেয়াদহীন ইনজেকশন পুশে দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ : ০১:২৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

সিঙ্গাইর(মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করায় পর পর দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্র ও শনিবার (১৭মে) সিঙ্গাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিঙ্গাইর ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ট্যাজিড নামে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান নিহতের স্বজনরা। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তারা।

জানাগেছে, গত শুক্রবার মধ্য সিঙ্গাইর এলকার মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী ও শায়েস্তা ইউনিয়নের চর লক্ষীপুর এলাকার মো. ফিরোজের স্ত্রী প্রসব বেদনা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। শুক্রবার বিকেলে অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে দুই নারী দুইজন পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। পরে দুই নবজাতকের শরীরে মেয়াদ উত্তীর্ণ ২৫০ মিলির ট্যাজিড ইঞ্জেকশন পুশ করেন ডাক্তার। ইঞ্জেকশন পুশ করার পর দুই নবজাতকের হার্টবিট কমে যায়। একজন ঢাকার শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন। অপরজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মারা যায়।

মৃত নবজাতকের বাবা মো. ফিরোজ বলেন, শুক্রবার বিকেলে ডাক্তার শামিমা রহমান আমার স্ত্রীকে অস্ত্র প্রচার করে। পরে আমি পুত্র সন্তানের বাবা হই। আজ সকালে হাসপাতালের নার্স আমার ছেলেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করে। ইনজেকশন পুশ করার এক ঘণ্টার মধ্যে আমার ছেলের মৃত্যু হয়।

মো. মাজেদুল ইসলাম নামে আরেক নবজাতকের পিতা বলেন, জন্মের পর আমার ছেলে খুব সুস্থ ছিলো। আমাদের সামনে নার্সরা একটি মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার ছেলের হার্টবিট কমে যায়। ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরপর দুইজন শিশুর মৃত্যুতে আমরা হতবাক। এটি মৃত্যু নয় এটা হত্যা, আমরা হত্যার সঠিক বিচার চাই।

সিঙ্গাইর ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মিজানুর রহমান লিটন বলেন, এটি একটি দুর্ঘটনা। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাফছান রেজা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অতিদ্রুত ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে.ও.এম তৌফিক আজম বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশনে নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। হাসপাতালটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।