জাকসুর ভিপি কে এই জিতু?

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের প্রার্থী আবদুর রশিদ জিতু।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান। ঘোষিত ফলে দেখা যায়, জাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ২১টিতেই জয় পেয়েছে শিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট। তবে শীর্ষ পদ ভিপি হিসেবে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতু। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয়ী হয়েছেন ওই জোটের মাজহারুল ইসলাম। বাকি তিনটি পদও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দখল করেন।
আব্দুর রশিদ জিতু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক এবং তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
তিনি জুলাই আন্দোলনের প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বিভিন্ন আন্দোলনের সামনের সারিতে নেতৃত্ব দেন। সেই থেকেই ক্যাম্পাসে তার জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের আগে জিতু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের হাতে প্রথম মার খেয়ে আহত হওয়ার পর তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বে আসেন। আরিফ সোহেল আটক হওয়ার পর ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন পরিচালনা করেন তিনি। এরপর সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামের নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন এবং সেখান থেকে নেতৃত্ব দেন।
গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শুরু হয় রাত সোয়া ১০টায় এবং ম্যানুয়ালি গণনা করায় ফল প্রকাশে বিলম্ব ঘটে।
মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৮৯৭ জন, এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
তবে বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন বয়কট করেছে ছাত্রদলসহ চারটি প্যানেল ও পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনকে অনিয়মপূর্ণ আখ্যা দিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারসহ বিএনপিপন্থি চার শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন।
যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ পদে জয় পেয়েছে শিবির-সমর্থিত জোট, সেখানে শীর্ষ পদে (ভিপি) জয়লাভ করে আবদুর রশিদ জিতু শুধু আলোচনায় আসেননি, বরং ভবিষ্যৎ রাজনীতিতেও শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।