শ্রীমঙ্গলে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবায় নতুন দিগন্ত: এক মাসে ২০০ নরমাল ডেলিভারি!

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগস্ট মাসে ২০০তম নরমাল ডেলিভারি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসমিন।
তিনি বলেন, “সেবা গ্রহীতা ও তাদের পরিবার হাসপাতাল এবং হাসপাতালের কর্মীদের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছেন বলেই এমনটি সম্ভব হয়েছে। তিনি সকল সেবাগ্রহীতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নরমাল ডেলিভারি করাতে হলে সেবাগ্রহীতার পাশাপাশি তার সঙ্গে আসা অভিভাবকদেরও ধৈর্য্য রাখতে হয়। হাসপাতালের প্রতিটি কর্মী সবাইকে ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন। স্বল্প জনবল নিয়ে আমরা মানসম্পন্ন সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রতিনিয়ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও খাবারের মান বৃদ্ধি এবং নিয়মিত মনিটরিং চলমান রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যদি কোনো দালাল আপনাদের চোখে পড়ে তবে অবশ্যই উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরিয়ে দেবেন। আমরা চাই শ্রীমঙ্গলের এই প্রতিষ্ঠান সারাদেশের মধ্যে আদর্শ হয়ে পরিচিতি লাভ করুক।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলাবাসীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “নরমাল ডেলিভারি বাসায় নয়, হাসপাতালে পাঠান। আমরা আপনাদের পাশে থেকে যথাসম্ভব সর্বোচ্চ সেবাটাই দেওয়ার চেষ্টা করব। নরমাল ডেলিভারির জন্য সার্বক্ষণিক আমরা প্রস্তুত আছি।”
উল্লেখ্য, গত ২৭শে আগস্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শ্রীমঙ্গলে একজন মায়ের নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে। মা এবং বাচ্চা উভয়ই ভালো আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা সমস্যা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রতিটি ডাক্তার, নার্স, মিডওয়াইফ, স্যাকমো, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী, সবাই আপনাদেরকে ভালো সেবা দেওয়ার এবং নরমাল ডেলিভারি বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। নরমাল ডেলিভারির জন্য ২৪/৭ দক্ষ মিডওয়াইফ ও নার্সদের মাধ্যমে এই সেবা চালু আছে। ডাঃ সিনথিয়া তাসমিনের সঠিক দিক নির্দেশনায় হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিজার কার্যক্রমও পুনরায় চালু হয়েছে। ডাঃ ফারজানা হক পর্ণা সপ্তাহে ১ দিন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শুধু (বুধবার) সিজার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “এই আগস্ট মাসে ২০০তম নরমাল ডেলিভারি বা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার বিষয়টি আমাদের জন্য আনন্দের। এ মহৎ কাজে জড়িত সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের বিজ্ঞ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার আন্তরিকতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এই হাসপাতাল নরমাল ডেলিভারির অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ করে সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে নতুন মাইলফলক অর্জন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালের সীমিত জনবল, নানাবিধ সমস্যার পরেও এই অর্জন যোগ্য ও সৎকর্ম ও নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ। নিরলসভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যারা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের জন্য শুভ কামনা রইল। বিশ্বাস করি এ প্রতিষ্ঠান একদিন চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য সব স্তরের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে আমি আশাবাদী।”