সিলেট বিভাগে স্পেশাল ট্রেন চালুর দাবিতে মানববন্ধন

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণসহ ৮ দফা দাবিতে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে এক বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে তিনটায় শ্রীমঙ্গলের সর্বস্তরের নাগরিকবৃন্দের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে শত শত মানুষ অংশ নেয়। এ ছাড়াও মানববন্ধনে যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু, সিলেট বিভাগ যোগাযোগ ও উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন সোহেলসহ অনেকে।
৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রীমঙ্গলে আন্দোলনের সমন্বয়ক কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও কুলাউড়া প্রতিনিধি মাহফুজ শাকিলের পরিচালনায় সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন— আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই, উপজেলা প্রেসক্লাব কুলাউড়ার সভাপতি মো. মছব্বির আলী, দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি সালেহ এলাহি কুটি, প্রতিদিনের বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি ইসমাইল মাহমুদ, ইত্তেফাকের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি ছায়েদ আহমদ, এনটিভি ইউরোপের কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি পিন্টু দেবনাথ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল বারী সোহেল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন রিপন, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (১২২৩)-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসলাম উদ্দিন জ্ঞানী, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আলমাছ পারভেজ তালুকদার, শ্রীমঙ্গলের মানবাধিকার কর্মী শাহ মসুদ আহমদ, দৈনিক ভোরের ডাকের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন বাচ্চু, সাংবাদিক এইচ ডি রুবেল, যুব সংগঠক শেখ সুমন, আব্দুল মজিদ, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়ার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক যাত্রীসাধারণ অংশ নেন। কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে ‘৮ দফা বাস্তবায়ন আন্দোলন কুলাউড়া’।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে অন্তত একটি লোকাল ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট সেকশনের সকল বন্ধ স্টেশন চালুকরণ, কুলাউড়া জংশন স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, সিলেট-ঢাকাগামী আন্তনগর কালনী ও পারাবত ট্রেনের আজমপুরের পর ঢাকা অভিমুখী সকল স্টেশনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার করতে হবে। সিলেটের সঙ্গে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করা এবং যাত্রীদের চাহিদা অনুপাতে প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সিলেট-আখাউড়া রেলপথটিতে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। সকল সরকারের আমলেই এই রেলপথটি বৈষম্যের শিকার। গত এক বছরে ঢাকা-সিলেট রেলপথ থেকে সরকার তৃতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় করেছে, কিন্তু রেলের উন্নয়নে বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এই রেলপথের উন্নয়নে ৮ দফা না মানলে আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সিলেটবাসী তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
‘সর্বস্তরের ট্রেনযাত্রীবৃন্দ’ নামক আন্দোলনের সমন্বয়ক আজিজুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান আখই জানান, ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী প্রথমে গত ৯ আগস্ট কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে সর্বস্তরের নাগরিকবৃন্দ ও ‘৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলন কুলাউড়া’র আয়োজনে মানববন্ধন করা হয়। ১১ আগস্ট কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে রেল উপদেষ্টা, সচিব ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ১৬ আগস্ট সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে সর্বস্তরের নাগরিকবৃন্দের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনে সংশ্লিষ্ট উপজেলার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রচারপত্র বিলি এবং রেলওয়ে ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। আগামী ৩০ আগস্ট কুলাউড়া জংশন স্টেশনে প্রতিবাদ সভা হবে। সেই প্রতিবাদ সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।