ঢাকা ১১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারে একই দিনে পৃথক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু

আজকের তরুণকণ্ঠ

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারে পৃথক দুটি দুর্ঘটনায় এক তরুণ ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দুর্লভপুর এলাকায় বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আল আমিন (২৫) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা হবিগঞ্জ-সিলেট বাস মালিক সমিতির দুটি বাস ভাঙচুর করে সড়ক অবরোধ করে। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। নিহত আল-আমিন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটগামী ‘হবিগঞ্জ বিরতিহীন এক্সপ্রেস’ নামের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার আরোহী আল-আমিন মারা যান এবং আরও তিনজন আহত হন। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহতরা হলেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার জিয়াউর রহমানের ছেলে আব্দুর রশিদ (২৮), মিন্নত আলীর ছেলে হযরত আলী (২৮) এবং আব্দুস শহীদের স্ত্রী মিনা বেগম।

মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ ফয়সাল জামান বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।”

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান জানান, “দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। বাসটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”

অন্যদিকে, শনিবার সকাল ৯টায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে হাওয়া বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে সকাল ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

স্থানীয় ও রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত হাওয়া বেগম ট্রেনে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শনিবার সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী আন্তঃনগর ট্রেন থেকে পড়ে গেলে ট্রেনের চাকায় তার দুটি পা ও একটি হাত কাটা পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোর পোদ্দার সম্রাট বলেন, “সকাল ১১টার দিকে ট্রেনে কাটা পড়া আহত এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু তার আগেই তিনি মারা যান।”

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “নিহত নারীর নাম হাওয়া বেগম এবং তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

প্রকাশ : ০১:২৭:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

মৌলভীবাজারে একই দিনে পৃথক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু

প্রকাশ : ০১:২৭:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারে পৃথক দুটি দুর্ঘটনায় এক তরুণ ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দুর্লভপুর এলাকায় বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আল আমিন (২৫) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা হবিগঞ্জ-সিলেট বাস মালিক সমিতির দুটি বাস ভাঙচুর করে সড়ক অবরোধ করে। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। নিহত আল-আমিন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটগামী ‘হবিগঞ্জ বিরতিহীন এক্সপ্রেস’ নামের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার আরোহী আল-আমিন মারা যান এবং আরও তিনজন আহত হন। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহতরা হলেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার জিয়াউর রহমানের ছেলে আব্দুর রশিদ (২৮), মিন্নত আলীর ছেলে হযরত আলী (২৮) এবং আব্দুস শহীদের স্ত্রী মিনা বেগম।

মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ ফয়সাল জামান বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।”

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান জানান, “দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। বাসটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”

অন্যদিকে, শনিবার সকাল ৯টায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে হাওয়া বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে সকাল ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

স্থানীয় ও রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত হাওয়া বেগম ট্রেনে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শনিবার সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী আন্তঃনগর ট্রেন থেকে পড়ে গেলে ট্রেনের চাকায় তার দুটি পা ও একটি হাত কাটা পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোর পোদ্দার সম্রাট বলেন, “সকাল ১১টার দিকে ট্রেনে কাটা পড়া আহত এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু তার আগেই তিনি মারা যান।”

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “নিহত নারীর নাম হাওয়া বেগম এবং তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।