ঢাকা ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মনপুরায় ৩ জেলে অপহরণ!লাখ টাকা মুক্তিপণে উদ্ধার

আজকের তরুণকণ্ঠ

মো. কামরুল হোসেন সুমন,মনপুরাঃ

ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার অপহৃত তিন জেলেকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে হাতিয়ার জলদস্যু বাহিনী । মুক্তিপণে উদ্ধার হয়ে ফিরে আসায় জেলে পরিবারের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে।
অপহৃত জেলেদের উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন অপহৃত জেলেদের আড়ৎদার মহিউদ্দিন হাওলাদার ও ফোরকান বর্দ্দার।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ১০টায় ট্রলার যোগে মনপুরায় আসে মুক্তিপণে উদ্ধার হওয়া তিন জেলে। উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন ৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের স্হায়ী বাসিন্দা।
আড়ৎদার ও অপহৃত জেলে পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল থেকে মুঠোফোনে জলদস্যুদের সাথে জেলে পরিবারের সদস্যদের সাথে মুক্তিপণের ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে দর কষাকষি শুরু হয়। দরকষাকষির এক পর্যায়ে ২ দিন পর জেলের মুক্তিপণ বাবদ এক লক্ষ টাকা নির্ধারণ হয়। পরে সোমবার রাতে মুক্তিপণের এক লক্ষ টাকা নগদ ও বিকাশে মাধ্যমে জেলে পরিবারের সদস্যরা জহদস্যুদের কাছে প্রদান করেন। পরে মুক্তিপণের টাকা জলদস্যুদের কাছে পৌছালে অপহৃত তিন জেলেকে গহিন বনের মাঝে ছেড়ে দেয় জলদস্যুরা। পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে অপহৃত জেলেরা ট্রলারে করে মনপুরায় ফিরে আসে।

অপহরণের শিকার জেলে গিয়াস উদ্দিন মাঝি জানান, শনিবার (২৬ জুলাই) গভীর রাতে মনপুরা ও হাতিয়ার মাঝা-মাঝি উড়িচর নামক স্থানে মাছ শিকার করছি । এমন সময় হাতিয়ার এক দল জলদস্যু আমার ট্রলারে আক্রমণ করে। আমর ট্রলারটি ও বিভিন্ন মালামাল ও আমাকে নিয়ে যায় । পরে আমার ট্রলার দিয়ে আরো ২টি ট্রলারে হামলা করে আমার ঘাটে আরো ২ মাঝি সহ আমাদের ৩ জন কে চোখ বেঁধে হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ এর গহীন জঙ্গলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। পরে আমাদের ফোন থেকে আড়ৎদার ও পরিবারের সদস্যদের নাম্বারে ফোন করে মুক্তিপণের টাকা দাবী করে। আমাদের মারধর করার সময় পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়ে শুনায়। মুক্তিপণের টাকা না পেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে মুক্তিপণের টাকা দিলে জলদস্যুরা আমাদের ছেড়ে দেয়। ছাড়ার সময় আমাদের কে একটি টোকেন প্রদান করেন। এবং এই ঘটনা প্রশাসনকে বললে আমাদের কে আবার নদীতে পেলে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় ।

জেলে অপহরণের বিষয়টি পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে অবহিত করেনা কেন এমন প্রশ্নে অপহৃত জেলে পরিবারের সদস্যরা জানান কোস্টগার্ড ও পুলিশকে অবহিত করলে জলদস্যুরা অপহৃত জেলেদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় তাই জানাই না ।

তবে তারা আরো বলছেন,মনপুরার জেলেদের উপর হাতিয়ার জলদস্যুরা প্রতিবছর আক্রমণ করে অপহরণ করে। তবে মেঘনা নদীতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের কোন ট্রহল না থাকার কারণে মেঘনায় একের পর এক ডাকাতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলেরা।

হাতিয়া নিঝুমদ্বীপ একটি নৌ-পুলিশ ফাড়ি থাকলেও মনপুরার জেলেদেরকে জলদস্যু হাত থেকে রক্ষার কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন না বলেও অভিযোগ করেন জেলেরা ।

এই ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান কবির জানান, অপহৃত জেলেরা ফিরে আসার খবর পেয়েছি। তবে কেউ এখনো এ বিষয়ে মামলা করেনি।

Tag :

পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

প্রকাশ : ০৩:৪২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

মনপুরায় ৩ জেলে অপহরণ!লাখ টাকা মুক্তিপণে উদ্ধার

প্রকাশ : ০৩:৪২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

মো. কামরুল হোসেন সুমন,মনপুরাঃ

ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার অপহৃত তিন জেলেকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে হাতিয়ার জলদস্যু বাহিনী । মুক্তিপণে উদ্ধার হয়ে ফিরে আসায় জেলে পরিবারের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে।
অপহৃত জেলেদের উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন অপহৃত জেলেদের আড়ৎদার মহিউদ্দিন হাওলাদার ও ফোরকান বর্দ্দার।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ১০টায় ট্রলার যোগে মনপুরায় আসে মুক্তিপণে উদ্ধার হওয়া তিন জেলে। উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন ৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের স্হায়ী বাসিন্দা।
আড়ৎদার ও অপহৃত জেলে পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল থেকে মুঠোফোনে জলদস্যুদের সাথে জেলে পরিবারের সদস্যদের সাথে মুক্তিপণের ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে দর কষাকষি শুরু হয়। দরকষাকষির এক পর্যায়ে ২ দিন পর জেলের মুক্তিপণ বাবদ এক লক্ষ টাকা নির্ধারণ হয়। পরে সোমবার রাতে মুক্তিপণের এক লক্ষ টাকা নগদ ও বিকাশে মাধ্যমে জেলে পরিবারের সদস্যরা জহদস্যুদের কাছে প্রদান করেন। পরে মুক্তিপণের টাকা জলদস্যুদের কাছে পৌছালে অপহৃত তিন জেলেকে গহিন বনের মাঝে ছেড়ে দেয় জলদস্যুরা। পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে অপহৃত জেলেরা ট্রলারে করে মনপুরায় ফিরে আসে।

অপহরণের শিকার জেলে গিয়াস উদ্দিন মাঝি জানান, শনিবার (২৬ জুলাই) গভীর রাতে মনপুরা ও হাতিয়ার মাঝা-মাঝি উড়িচর নামক স্থানে মাছ শিকার করছি । এমন সময় হাতিয়ার এক দল জলদস্যু আমার ট্রলারে আক্রমণ করে। আমর ট্রলারটি ও বিভিন্ন মালামাল ও আমাকে নিয়ে যায় । পরে আমার ট্রলার দিয়ে আরো ২টি ট্রলারে হামলা করে আমার ঘাটে আরো ২ মাঝি সহ আমাদের ৩ জন কে চোখ বেঁধে হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ এর গহীন জঙ্গলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। পরে আমাদের ফোন থেকে আড়ৎদার ও পরিবারের সদস্যদের নাম্বারে ফোন করে মুক্তিপণের টাকা দাবী করে। আমাদের মারধর করার সময় পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়ে শুনায়। মুক্তিপণের টাকা না পেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে মুক্তিপণের টাকা দিলে জলদস্যুরা আমাদের ছেড়ে দেয়। ছাড়ার সময় আমাদের কে একটি টোকেন প্রদান করেন। এবং এই ঘটনা প্রশাসনকে বললে আমাদের কে আবার নদীতে পেলে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় ।

জেলে অপহরণের বিষয়টি পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে অবহিত করেনা কেন এমন প্রশ্নে অপহৃত জেলে পরিবারের সদস্যরা জানান কোস্টগার্ড ও পুলিশকে অবহিত করলে জলদস্যুরা অপহৃত জেলেদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় তাই জানাই না ।

তবে তারা আরো বলছেন,মনপুরার জেলেদের উপর হাতিয়ার জলদস্যুরা প্রতিবছর আক্রমণ করে অপহরণ করে। তবে মেঘনা নদীতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের কোন ট্রহল না থাকার কারণে মেঘনায় একের পর এক ডাকাতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলেরা।

হাতিয়া নিঝুমদ্বীপ একটি নৌ-পুলিশ ফাড়ি থাকলেও মনপুরার জেলেদেরকে জলদস্যু হাত থেকে রক্ষার কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন না বলেও অভিযোগ করেন জেলেরা ।

এই ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান কবির জানান, অপহৃত জেলেরা ফিরে আসার খবর পেয়েছি। তবে কেউ এখনো এ বিষয়ে মামলা করেনি।