বিয়ের ৪ মাসেই নবীগঞ্জে যুবকের আত্মহত্যা, নেপথ্যে পারিবারিক নির্যাতন?

স্টাফ রিপোর্টার:
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় ভালোবেসে বিয়ে করার মাত্র চার মাসের মাথায় সেতু মিয়া (১৭) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তাদের অভিযোগের তীর সেতুর স্ত্রীর পরিবারের দিকে।
সেতু মিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে। ঘটনাটি ঘটে গত ২৭ জুলাই, রবিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ১১ নং গজনাইপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে। এর তিন দিন পর, ৩০ জুলাই রাত সাড়ে ১২টায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বনগাঁও গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেতুর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়। এরপর সামাজিক সম্মতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ শুরু হয় বলে জানা গেছে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, সেতুর স্ত্রী আরিফা বেগম প্রায়ই টাকার জন্য তাকে চাপ দিতেন এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। সম্প্রতি আরিফা বাবার বাড়ি চলে গেলে সেতুকেও সঙ্গে নিয়ে যান।
গত ২৭ জুলাই এক অজ্ঞাত সিএনজিচালক সেতুর মায়ের মোবাইল ফোনে জানান যে, বনগাঁও গ্রামের মতলিব মিয়ার বাড়ির সামনের রাস্তায় সেতু অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। খবর পেয়ে তার মা ওই চালককে অনুরোধ করলে তিনি সেতুকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় জানানো হলে এসআই মো. খবির উদ্দিন লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, “নিহতের মায়ের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, পরিবারের পক্ষ থেকে পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”