ঢাকা ০৭:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাবলিগের বিবাদ নিরসনে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন; ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা

আজকের তরুণকণ্ঠ

তাবলিগ জামাতের দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে এই কমিটিতে দুই পক্ষেরই প্রতিনিধি থাকবেন।

বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তাবলিগের উভয় পক্ষের মুরব্বিদের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা খালিদ হোসেন জানান, এটিই প্রথমবার, যখন দুই গ্রুপ সরকারের উপদেষ্টাদের সাথে একত্রে বসে আলোচনার সুযোগ পেল। তিনি বলেন, “তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপ অনেক দিন ধরে আমাদের সাথে বৈঠক করতে চাচ্ছিলেন। আজ আমরা তাদের নিয়ে একসাথে বসেছি। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “গত বছর একটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে জন্য আমরা উভয় পক্ষের সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করি, এই কমিটির মাধ্যমে উভয় গ্রুপ একটি সমঝোতায় উপনীত হতে পারবে এবং ভবিষ্যতের সংঘাতের পথ বন্ধ হবে।”

সরকারের ব্যস্ততার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “আগামীতে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, তাই আমাদের সময় স্বল্পতা রয়েছে। আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। তারা দুই গ্রুপ কমিটির সাথে বসবেন।”

এই কমিটি মূলত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে:

  • বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন: দুই পক্ষ একসাথে ইজতেমা করবে, না কি আলাদাভাবে—সে বিষয়ে আলোচনা করে সুপারিশ করবে।
  • কাকরাইল মসজিদ: মসজিদের ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সমাধান করবে।
  • অন্যান্য বিষয়: দুই পক্ষের মধ্যেকার অন্যান্য অমীমাংসিত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে একটি সমঝোতার পথ তৈরি করবে।

কমিটির আলোচনার ফলাফল ও সুপারিশ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাত মূলত দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা, যাদের অন্যতম নেতা কাকরাইল মসজিদের আহলে শূরা মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। অপরপক্ষে রয়েছেন মাওলানা সাদবিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়ের আহমেদপন্থী (শূরায়ে নেজাম)।

গত বছর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণ ও ইজতেমা আয়োজনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, যাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এই দীর্ঘদিনের বিবাদ নিরসনেই সরকার এবার কঠোরভাবে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিল।

বৈঠকে সাদপন্থী মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম এবং জুবায়েরপন্থী মাওলানা মামুনুল হকসহ উভয় পক্ষের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।

পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

প্রকাশ : ০৪:৪০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

তাবলিগের বিবাদ নিরসনে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন; ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা

প্রকাশ : ০৪:৪০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

তাবলিগ জামাতের দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে এই কমিটিতে দুই পক্ষেরই প্রতিনিধি থাকবেন।

বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তাবলিগের উভয় পক্ষের মুরব্বিদের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা খালিদ হোসেন জানান, এটিই প্রথমবার, যখন দুই গ্রুপ সরকারের উপদেষ্টাদের সাথে একত্রে বসে আলোচনার সুযোগ পেল। তিনি বলেন, “তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপ অনেক দিন ধরে আমাদের সাথে বৈঠক করতে চাচ্ছিলেন। আজ আমরা তাদের নিয়ে একসাথে বসেছি। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “গত বছর একটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে জন্য আমরা উভয় পক্ষের সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করি, এই কমিটির মাধ্যমে উভয় গ্রুপ একটি সমঝোতায় উপনীত হতে পারবে এবং ভবিষ্যতের সংঘাতের পথ বন্ধ হবে।”

সরকারের ব্যস্ততার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “আগামীতে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, তাই আমাদের সময় স্বল্পতা রয়েছে। আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। তারা দুই গ্রুপ কমিটির সাথে বসবেন।”

এই কমিটি মূলত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে:

  • বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন: দুই পক্ষ একসাথে ইজতেমা করবে, না কি আলাদাভাবে—সে বিষয়ে আলোচনা করে সুপারিশ করবে।
  • কাকরাইল মসজিদ: মসজিদের ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সমাধান করবে।
  • অন্যান্য বিষয়: দুই পক্ষের মধ্যেকার অন্যান্য অমীমাংসিত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে একটি সমঝোতার পথ তৈরি করবে।

কমিটির আলোচনার ফলাফল ও সুপারিশ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাত মূলত দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা, যাদের অন্যতম নেতা কাকরাইল মসজিদের আহলে শূরা মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। অপরপক্ষে রয়েছেন মাওলানা সাদবিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়ের আহমেদপন্থী (শূরায়ে নেজাম)।

গত বছর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণ ও ইজতেমা আয়োজনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, যাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এই দীর্ঘদিনের বিবাদ নিরসনেই সরকার এবার কঠোরভাবে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিল।

বৈঠকে সাদপন্থী মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম এবং জুবায়েরপন্থী মাওলানা মামুনুল হকসহ উভয় পক্ষের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।