ঢাকা ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিভাগীয় কোন্দলের জের: যশোরের স্টেশনের সব ফ্যান খুলে নিল প্রকৌশলী

আজকের তরুণকণ্ঠ

যশোরের সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনে তীব্র গরমে অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন যাত্রীরা। রেলওয়ের বিদ্যুৎ ও পরিবহন—এই দুই বিভাগের মধ্যকার সমন্বয়হীনতার জেরে স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগার, টিকিট কাউন্টার ও স্টেশন মাস্টারের কক্ষ থেকে সমস্ত ফ্যান খুলে নেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার (২৬ জুলাই) এই ঘটনা ঘটলেও সম্প্রতি তা প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় যাত্রী সাধারণ থেকে শুরু করে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পর্যন্ত চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

পদ্মাসেতু রেল সংযোগ চালুর পর খুলনা থেকে ঢাকাগামী ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সিঙ্গিয়া-পদ্মবিলা জংশন দিয়ে চলাচল শুরু করে। এতে সিঙ্গিয়া জংশনের গুরুত্ব বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। পদ্মাসেতু লিঙ্ক প্রকল্পের অধীনে সিঙ্গিয়া স্টেশনে একটি নতুন ভবনও নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের নির্দেশে সেই নতুন ভবন থেকেই সব ফ্যান ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, মূলত বিদ্যুৎ ও পরিবহন বিভাগের মধ্যকার ঠেলাঠেলির কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নতুন ভবনে ফ্যান ও অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপনের পর বিদ্যুৎ বিভাগ তা স্টেশন মাস্টারের (পরিবহন বিভাগ) কাছে লিখিতভাবে হস্তান্তরের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান নিরাপত্তার अभाव এবং এটিকে তার এখতিয়ারবহির্ভূত বিষয় উল্লেখ করে সরঞ্জামগুলো বুঝে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরই জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী জাকির হোসেন সব ফ্যান খুলে নিয়ে যান বলে অভিযোগ।

খুলে নেওয়া হয়েছে: দুটি যাত্রী বিশ্রামাগার থেকে ৮টি ফ্যান, টিকিট কাউন্টার থেকে ৩টি ফ্যান, স্টেশন মাস্টার ও সহকারী স্টেশন মাস্টারের কক্ষ থেকে ৪টি ফ্যান, ৫টি এগজস্ট ফ্যান, স্টেশন মাস্টারের কক্ষের এসির বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর থেকে স্টেশনে এক দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে যাত্রী সাধারণের পাশাপাশি রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একজন নারী ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, জাকির হোসেন অসুস্থ থাকায় কথা বলতে পারবেন না।

Tag :

পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

প্রকাশ : ০৪:৫৭:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

বিভাগীয় কোন্দলের জের: যশোরের স্টেশনের সব ফ্যান খুলে নিল প্রকৌশলী

প্রকাশ : ০৪:৫৭:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

যশোরের সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনে তীব্র গরমে অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন যাত্রীরা। রেলওয়ের বিদ্যুৎ ও পরিবহন—এই দুই বিভাগের মধ্যকার সমন্বয়হীনতার জেরে স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগার, টিকিট কাউন্টার ও স্টেশন মাস্টারের কক্ষ থেকে সমস্ত ফ্যান খুলে নেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার (২৬ জুলাই) এই ঘটনা ঘটলেও সম্প্রতি তা প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় যাত্রী সাধারণ থেকে শুরু করে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পর্যন্ত চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

পদ্মাসেতু রেল সংযোগ চালুর পর খুলনা থেকে ঢাকাগামী ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সিঙ্গিয়া-পদ্মবিলা জংশন দিয়ে চলাচল শুরু করে। এতে সিঙ্গিয়া জংশনের গুরুত্ব বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। পদ্মাসেতু লিঙ্ক প্রকল্পের অধীনে সিঙ্গিয়া স্টেশনে একটি নতুন ভবনও নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের নির্দেশে সেই নতুন ভবন থেকেই সব ফ্যান ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, মূলত বিদ্যুৎ ও পরিবহন বিভাগের মধ্যকার ঠেলাঠেলির কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নতুন ভবনে ফ্যান ও অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপনের পর বিদ্যুৎ বিভাগ তা স্টেশন মাস্টারের (পরিবহন বিভাগ) কাছে লিখিতভাবে হস্তান্তরের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান নিরাপত্তার अभाव এবং এটিকে তার এখতিয়ারবহির্ভূত বিষয় উল্লেখ করে সরঞ্জামগুলো বুঝে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরই জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী জাকির হোসেন সব ফ্যান খুলে নিয়ে যান বলে অভিযোগ।

খুলে নেওয়া হয়েছে: দুটি যাত্রী বিশ্রামাগার থেকে ৮টি ফ্যান, টিকিট কাউন্টার থেকে ৩টি ফ্যান, স্টেশন মাস্টার ও সহকারী স্টেশন মাস্টারের কক্ষ থেকে ৪টি ফ্যান, ৫টি এগজস্ট ফ্যান, স্টেশন মাস্টারের কক্ষের এসির বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর থেকে স্টেশনে এক দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে যাত্রী সাধারণের পাশাপাশি রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একজন নারী ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, জাকির হোসেন অসুস্থ থাকায় কথা বলতে পারবেন না।